ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম

বর্তমান যুগ হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির যুগ। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে আপনি চাইলে ঘরে বসে অনলাইনে আয় করতে পারেন। অনলাইনে আয় করার জন্য আপনাকে একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষ হতে হবে। আমাদের 

দেশে বর্তমানে বেকার সমস্যা একটা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। আপনি অনলাইনে ঘরে বসে আয় করার মাধ্যমে নিজেকে সাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। 

সূচীপত্রঃ ঘরে বসে অনলাইনে ইনকাম

আর্টিকেল রাইটিং করে আয়

অনলাইনে আয় করার সবথেকে সহজ উপায় হল আর্টিকেল রাইটিং। আপনি চাইলে আপনার দক্ষতা দিয়ে অনলাইনে লেখালেখি করে প্রচুর টাকা আয় করতে পারেন। একজন আর্টিকেল রাইটারের কাজ হল কোন একটা টপিক নিয়ে বিস্তারিত লেখা। আপনার যদি কোন একটা বিষয়ে ভাল ধারণা থাকে তবে সেই বিষয় নিয়ে আজই আর্টিকেল লেখা শুরু করে দিতে পারেন।

বর্তমানে সকলে ল্যাপটপ স্মার্টফোন ও কম্পিউটার ব্যবহার করে। যারা অনলাইনে বিভিন্ন অজানা বিষয় সার্চ দিয়ে থাকে। অজানা বিষয়ে সার্চ দেয়ার পর তারা সে সমস্ত ওয়েবসাইটগুলোতে বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল দেখতে পাই। আর আপনি যদি একজন ভালো আর্টিকেল রাইটার হয়ে থাকেন তাহলে আর্টিকেল রাইটিং করে ভালো টাকা আয় করতে পারেন।

এছাড়া বিভিন্ন ওয়েবসাইট তাদের সাইডে আর্টিকেল লেখার জন্য আর্টিকেল রাইটার নিয়োগ দিয়ে থাকে। কেবল আর্টিকেল লেখালেখি করলে তো হবে না আপনার আর্টিকেল যেন ভালো হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে এজন্য আপনাকে নিয়মিত প্র্যাকটিস করতে হবে। আপনি ওয়েবসাইটগুলোতে অন্যের আর্টিকেলগুলো পড়ুন বুঝার চেষ্টা করুন কিভাবে তারা তাদের তথ্যগুলো আর্টিকেলে প্রকাশ করেছে। আপনি যত ভালো আর্টিকেল লিখতে পারবেন আপনারাই তত বেশি হবে।

গ্রাফিক্স ডিজাইন 

আপনি যদি একজন ভালো গ্রাফিক্স  ডিজাইনার হয়ে থাকেন তাহলে অনলাইনে কাজ করে টাকা আয় করতে পারবেন। প্রথমে আমাদের বুঝতে হবে গ্রাফিক্স ডিজাইন কি। গ্রাফিক্স ডিজাইন হল আপনার মনের কল্পনাকে ছবির মাধ্যমে ডিজিটাল সফটওয়্যার এর মাধ্যমে তুলে ধরা। আমরা বিভিন্ন কোম্পানির যে লোগো গুলো দেখতে পায় সেগুলো এক একটা কোম্পানির পরিচয় বহন করে।

বর্তমানে সারা পৃথিবীতে অসংখ্য কোম্পানি তৈরি হচ্ছে। এই কোম্পানিগুলো তাদের প্রতিষ্ঠানের লোগো তৈরি করার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনার নিয়োগ দিয়ে থাকেন। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আপনি অনলাইন মার্কেট লোগো, ব্যানার, ফেস্টন ডিজাইন  করে প্রচুর টাকা আয় করতে পারেন।

এই গ্রাফিক্স ডিজাইন  আপনি কেবল অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করে আয় করতে পারবেন না চাইলে আপনি আপনার ডিজাইন এনভাটো মার্কেটপ্লেসে বিক্রির মাধ্যমে প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট করতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক্স ডিজাইন কনটেস্ট অংশগ্রহণ করে আপনি নিজের মেধার পরিচয় দিতে পারেন। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হতে গেলে আপনাকে যথেষ্ট ক্রিয়েটিভ হতে হবে তাহলে আপনি সফল হবেন।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে আয়

আপনি ঘরে বসে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে অনেক টাকা আয় করতে পারেন। পৃথিবীতে অনেক সোশ্যাল মিডিয়া সাইট আছে যেরকম ফেসবুক, টুইটা্‌ স্ন্যাপ চ্যাট ইত্যাদি। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক সময় ব্যয় করে। একজন মানুষ গড়ে ১৪৪ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যয় করেন তাহলে সহজে বুঝতে পারছেন এই সোশ্যাল মিডিয়া গুলো আয়ের অন্যতম একটা উৎস হতে পারে।

এর জন্য আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ভালোভাবে জানতে হবে। আপনি ভালোভাবে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং জানার পর ফাইবার এসব বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসের কাস্টমারের কাজ করতে পারেন। এছাড়াও আপনি আপনার নিজস্ব প্রোডাক্ট সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিক্রি করে আয় করতে পারেন।

ধরুন আপনার একটা আমের বাগান আছে। প্রতিবছর আপনার বাগানের যথেষ্ট ভালো আম হয়। আপনার আমের মান ভাল হলে আপনি আপনার আম সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বিক্রি করে যথেষ্ট ভাল ইমকাম করতে পারবেন।এছাড়াও আপনি আপনার বিভিন্ন দক্ষতা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন।

ওয়েবসাইট তৈরি করে আয়

আপনি ঘরে বসে ওয়েবসাইট তৈরি করে অনেক টাকা আয় করতে পারেন। বর্তমান পৃথিবীতে প্রতিদিন অনেক প্রতিষ্ঠান তৈরি হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য নিত্য নতুন ওয়েবসাইটের দরকার হচ্ছে। ওয়েবসাইট গুলোর মাধ্যমে কোম্পানি তাদের প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস মানুষের সামনে তুলে ধরে।

একজন দক্ষ ওয়েব ডেভলপারের চাহিদা অনেক। দক্ষ হতে হলে আপনাকে এইচটিএমএল ,সিএসএস জাভা স্ক্রিপ ভালোভাবে জানতে হবে। এছাড়া একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ জানা থাকলে ভালো হয়। প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ বলতে পাইথন জাভা স্ক্রিপ ্ট ইত্যাদি আরো অনেক ল্যাঙ্গুয়েজ আছে।

আপনি মার্কেটপ্লেসগুলোতে কেবল নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করতে পারবেন না চাইলে আপনি থিম ফরেস্ট মার্কেটপ্লেসে নিজের তৈরি করা ওয়েবসাইট বিক্রি করে প্যাসিভ ইনকাম জেনারেট করতে পারেন। কাজে বুঝতেই পারছেন একজন ওয়েব ডেভলপার হতে পারলে আপনার ডিমান্ড অনেক বেড়ে যাবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আয় 

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারেন। অ্যাফিলেট মার্কেটিং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অনেক মানুষ অনেক টাকা আয় করছে। এই মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে একটা টাকাও খরচ করতে হবে না আপনি চাইলে বিনা পুঁজিতে এই মার্কেটিং শুরু করতে পারেন।

আমাদেরকে প্রথমে বুঝতে হবে অ্যাফিলিয়েট  মার্কেটিং কি। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে অন্যের কোন পণ্য বা সেবা আপনি আপনার ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন আকারে দেখাতে পারেন। তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি করে আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারেন আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। উদাহরণস্বরূপ আপনি একটা কোম্পানির মোবাইল আপনার ওয়েবসাইট বিজ্ঞাপন আকারে দেখাচ্ছেন এখন কোম্পানির সাথে আপনার চুক্তি হলো প্রতিটা মোবাইল বিক্রির বিনিময়ে কোম্পানি আপনাকে ২৫ শতাংশ কমিশন দিবে।

এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করা অত্যন্ত সহজ। কারণ বর্তমান সময়ে মানুষের যে জিনিসটা দরকার সেটা জানার জন্য মানুষ এখন আর বাজারে যায় না। মানুষ ওয়েবসাইটে সার্চ দেয় সে পণ্য সম্পর্কে জানে। তারপর তার পছন্দের জিনিস অর্ডার করে। তাহলে বুঝতেই পারছেন আপনি একজন এফিলেয়েট মার্কেট হতে পারলে কত লাভ। এছাড়া এই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংকে প্যাসিভ ইনকামের আরো একটা অন্যতম মাধ্যমে বলা যায়।

ভিডিও এডিটিং করে আয়

আপনি ভিডিও এডিটিং করে ঘরে বসে অনেক টাকা আয় করতে পারেন। আপনার হাতের সামনে থাকা ডিভাইসটি খুললে প্রতিদিন হরেক রকমের ভিডিও আপনার সামনে আসে। আর এ সমস্ত ভিডিও তৈরি করছে আমার আর আপনার মতই কোন একজন এডিটর। আর এজন্য প্রতিদিন ভিডিও এডিটিং এ চাহিদা বেড়ে চলেছে।

বর্তমানে মানুষ বিবাহ জন্মদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মুহূর্ত ভিডিওর মাধ্যমে ধারণ করে রাখতে চাই। একজন ভিডিও এডিটর হতে চাইলে আপনাকে বেশ কিছু সফটুয়ার সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। আপনি চাইলে এ সমস্ত সফটওয়্যার গুলো থেকে ভিডিও এডিটিং করে ভিডিও এডিটিং এর কাজ শুরু করতে পারেন। আপনার ভিডিও এডিটিং এর মান যত ভালো হবে আপনার কাজের চাহিদা তত বাড়বে।

ভিডিও এডিটিং এর কাজ শিখে আপনি অনেক ধরনের কাজ করতে পারবেন। চাইলে আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি ভিডিও এডিটিং শিখে বিভিন্ন শিক্ষামূলক ভিডিও তৈরি করতে পারবেন, বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করে পার্সোনাল ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ

আপনি ঘরে বসে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর কাজও করতে পারবেন। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজের জন্য আপনাকে অফিসে যাওয়া লাগবে না। এই ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট এর কাজ বলতে আমরা বুঝি আপনি একটা কোম্পানির হয়ে আপনি কোম্পানির বিভিন্ন প্রোডাক্ট সম্পর্কে ক্লায়েন্টকে অবহিত করবেন এছাড়াও আপনাকে ক্লায়েন্টের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে আপনার কোম্পানির সেবা ও সার্ভিস সম্বন্ধে।

এই ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট এর কাজ করার জন্য আপনার প্রথম যোগ্যতা হলো আপনাকে সুন্দর এবং গোছানো কথ বলতে হবে। আপনার কোম্পানির প্রোডাক্ট এবং সেবা সম্পর্কে বেশ ভালো ধারণা থাকতে হবে। যেন কাস্টোমার যে কোন বিষয় জিজ্ঞাসা করলে আপনি আপনার কোম্পানির সেবা সম্পর্কে ভালোভাবে উত্তর দিতে পারেন।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিয়ে থাকে। আর যেহেতু এই কাজটি আপনি ঘরে বসে করতে পারবেন সে জন্য লাভবান হতে পারবেন। এছাড়াও আপনি মার্কেটপ্লেসে ভার্চুয়াল এসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন।

শেষ কথা

আপনি ঘরে বসে ওপরে যে কোন উল্লেখিত উপায়ে অনলাইনে কাজ করে প্রচুর টাকা আয় করতে পারেন। এই কাজগুলো শেখার জন্য আপনাকে যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিতে হবে। এই অনলাইনে কাজের মাধ্যমে অনেক বেকার যুবক নিজেকে স্বাবলম্বী করে হিসেবে গড়ে তুলেছে।

আশা করি আপনি আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়ে যথেষ্ট উপকৃত হয়েছেন। আমাদের এই আর্টিকেলে কোন বিষয়টি আপনার সবথেকে ভালো লেগেছে সে বিষয়ে মন্তব্য করুন। এতক্ষণ ধৈর্য সহকারে আমাদের আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি এই আর্টিকেল পড়ে আপনি যথেষ্ট উপকৃত হবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url