কিডনি ভালো রাখার উপায়

কিডনি মানব শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি মানব শরীরের কোমরের নিচে অবস্থিত। এই অঙ্গটি একজোড়া। মানে ডান এবং বাম পাশে একটি করে কিডনি আছে মানুষের। এই কিডনির প্রধান কাজ হল মানুষের শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করে দেওয়া মুত্রের মাধ্যমে। কেবল দূষিত পদার্থ বের করে দেওয়া নয় এটি মানব শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখে। কাজেই বুঝা যাচ্ছে এই অঙ্গটির গুরুত্ব অনেক। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি বিকল হতে শুরু করলে মানুষ সহজে বুঝতে পারে না যখন বুঝতে পারে তখন কিডনির রোগ অনেক জটিল অবস্থায় পৌঁছে যায়। এ কারণে কিডনির অসুখকে নীরব ঘাতক বলা হয়। কাজেই সুস্থ থাকা অবস্থায় মানুষের কিডনির সুস্থতার প্রতি দৃষ্টিপাত করা উচিত।

সূচীপত্রঃ কিডনি ভালো রাখার উপায়


পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান

কিডনি সুস্থ রাখার জন্য আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস আমাদের পানি খেতে হবে। যদি ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায় তাহলে এই পরিমাণ আরো বেশি হবে। শরীরে পানির অভাব হলে কিডনির কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে মানুষের কিডনি তাড়াতাড়ি খারাপ হতে শুরু করে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন কিডনি সুস্থ রাখতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে।

রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে

কিডনি সুস্থ রাখার জন্য রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ রাখা খুব জরুরী। রক্তে সুগারের পরিমাণ বেশি হলে কিডনির পক্ষে তার পরিশোধন করা কঠিন হয়ে পড়ে। তাই কিডনি সুস্থ রাখার জন্য আমাদের নিয়মিত রক্তের সুগার পরীক্ষা করাতে হবে। প্রয়োজনে মিষ্টি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ

যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। মানব শরীরের জন্য স্বাভাবিক রক্তচাপ হল ১২০/৮০। এর থেকে বেশি রক্তচাপ দীর্ঘদিন থেকে থাকলে আপনার শরীরের কিডনি খারাপ হয়ে যেতে পারে। এর জন্য আপনার রক্তচাপ নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। যদি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকে তাহলে আপনার ডাক্তারের পরামর্শে ঔষধ সেবন করা উচিত। 

অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে দূরে থাকুন

অনেকের অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার অভ্যাস থাকে। যদি এই অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে আজই অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে দূরে থাকুন। কারণ অতিরিক্ত লবণ শরীরে আমিষের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। আর এই অতিরিক্ত আমিষ শরীর থেকে কিডনির পক্ষে বের করে দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে তখন অতিরিক্ত শরীর থেকে বের করে দিতে। 

অতিরিক্ত প্রাণিজ আমিষ গ্রহণ করা থেকে দূরে থাকুন

আমাদের যদি অতিরিক্ত প্রাণিজ  আমিষ গ্রহণ করার অভ্যাস থাকে তাহলে এখনই তা পরিত্যাগ করা উচিত। তাই এখন থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রাণিজ আমিষ গ্রহণ করুন। আর এই অভ্যাসটি আপনার কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

ধূমপান থেকে দূরে থাকুন

আপনি যদি ধূমপায়ী হয়ে থাকেন তাহলে আজ থেকে ধূমপান ছেড়ে দিন। কারণ ধূমপান কেবল ফুসফুসের ক্ষতি করে না এটি কিডনিরও ক্ষতি করে। ধূমপান মানুষের রক্তের ভেসেলকে দুর্বল করে দেয়। ফলে রক্ত পরিশোধন করা কিডনির পক্ষে কঠিন হয়ে পড়ে। কাজেই আপনি যদি সুস্থ কিডনি রাখতে চান তাহলে আজ থেকেই ধূমপান ছেড়ে দিন।

অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন

আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন থাকে তাহলে তা কিডনির জন্য ক্ষতিকর। এজন্য অতিরিক্ত ওজন থাকলে আপনাকে তা নিয়ম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ব্যায়ামের মাধ্যমে অতিরিক্ত ওজন শরীর থেকে ঝড়িয়ে ফেলুন। কারণ কিডনি সুস্থ রাখার জন্য অতিরিক ওজন আপনাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

কোমল পানীয় গ্রহণ থেকে দূরে থাকুন

আপনার যদি অতিরিক্ত কোমল পানি গ্রহনের অভ্যাস থাকে তাহলে তা বর্জন করুন। কারণ অতিরিক্ত কোমল পানি গ্রহণ করলে আপনার রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যাবে। আর রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে গেলে কিডনির পক্ষে তা পরিশোধন করা কঠিন হয়ে পড়ে।

নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করুন

নিয়মিত কিডনি পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি কিডনির অবস্থা জানতে পারবেন। এর জন্য বছরে অন্তত একবার  কিডনি পরীক্ষা করুন।

শেষ কথা

কিডনি আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই কিডনি সুস্থ রাখার জন্য আমাদের উপরে উল্লেখিত নিয়মগুলো যথারীতি অনুসরণ করতে হবে। কারণ সুস্থ সবল ভাবে বেঁচে থাকতে হলে আমাদেরকে কিডনি ভালো রাখতে হবে। কিডনি একটি নীরব ঘাতক। এর জন্য কিডনির অসুখ হবার আগে আপনাকে কিডনির সুস্থতার দিকে নজর দিতে হবে । আমরা সকলে চাই একটি সুস্থ ও সবল শরীর। আর সুস্থ ও সবল শরীর পাবার জন্য শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মত আমাদের কিডনির সুস্থতার দিকেও নজর রাখতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url