দার্জিলিং ভ্রমণ। দার্জিলিংয়ে থাকা,খাওয়া ও ভ্রমণের খরচ
দার্জিলিং শৈল শহর নামে পরিচিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার দার্জিলিং। এখানে
অসংখ্য ভ্রমণ ও দর্শনীয় স্থান আছে। বিভিন্ন ঋতুতে দার্জিলিং ভিন্ন ভিন্ন রূপে
সাজে। এই দার্জিলিং ছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে অসংখ্য
পর্যটক দার্জিলিং ভ্রমনে যায়। আমরা নিচের আলোচনায় দার্জিলিং ভ্রমণ ভ্রমণের সঠিক
সময় থাকার জায়গা এবং দর্শনীয় স্থান নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সূচীপত্রঃ দার্জিলিং ভ্রমণ। দার্জিলিংয়ে থাকা,খাওয়া ও ভ্রমণের খরচ
বাংলাদেশ থেকে কিভাবে দার্জিলিং ভ্রমণ করবেন
বাংলাদেশ থেকে দার্জিলিং ভ্রমণের জন্য প্রথম আপনাকে ভারতের হাইকমিশন বরাবর ভিসার
জন্য আবেদন করতে হবে। ভিসা হয়ে গেলে আপনি দার্জিলিং ভ্রমণের জন্য একটা
নির্দিষ্ট সময়ে ভিসা পাবেন। বাংলাদেশ থেকে আপনি বিভিন্ন পথে দার্জিলিং যেতে
পারেন। সড়ক পথে দার্জিলিং যেতে গেলে প্রথমে আপনাকে ঢাকা থেকে বাংলাবান্ধা
সীমান্তে যেতে হবে সীমান্ত ইমিগ্রেশন শেষ হলে আপনি ভারতে প্রবেশ করতে পারবেন এবং
সেখান থেকে ট্যাক্সি যোগে দার্জিলিঙে যেতে পারবেন। এছাড়া বিমান চোখে যেতে চাইলে
আপনাকে পশ্চিমবঙ্গে এয়ারপোর্টে নামতে হবে তারপর লোকাল ফ্লাইটে বাগডোগরা
এয়ারপোর্ট যেতে হবে এবং সেখান থেকে ট্যাক্সি যোগে দার্জিলিংয়ে চলে যেতে
পারবেন।
দার্জিলিং ভ্রমণের উপযুক্ত সময়
বিভিন্ন ঋতুতে দার্জিলিং বিভিন্ন রূপে সাজে এ কারণে আপনি যেকোনো সময় যেতে চাইলে
দার্জিলিং যেতে পারবেন। কোন কোন ঋতুতে দার্জিলিং কেমন রূপে সাজে তাই আমরা
নিচের আলোচনায় আলোচনা করব
- গ্রীষ্মকালঃ গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা বেড়ে যায় বিশ্বের অসংখ্য পর্যটক এ সময় দার্জিলিং এ আসে। এ সময় দার্জিলিং এর গাছপালা পত্র পল্লবের বিকশিত হয়ে ওঠে। এ সময় চাইলে আপনি দার্জিলিংয়ে আসতে পারেন। কাঞ্চনজঙ্ঘা টাইগার এ সমস্ত জায়গা বেশ ভালোভাবে ভ্রমণ করতে পারবেন যদি আপনি এ সময় দার্জিলিং এ আসেন।
- বর্ষাকালঃ বর্ষাকালে দার্জিলিং এ পর্যটকদের তুলনামূলকভাবে কম আসা হয়। এর কারণ বর্ষাকালে পাহাড় ধ্বস নিয়মিত ঘটনা। রাস্তাঘাট পিচ্ছিল থাকে। তারপরও তুলনামূলক কম পর্যটক দার্জিলিং এ বর্ষাকালে আসে। কারণ বর্ষাকালে এই শৈলশহর প্রাকৃতিক ধোয়ায় ঢেকে যায়।
- শীতকালঃ শীতকালে দার্জিলিং এ বড় ধরনের তুষারপাত হয়। এই সময়টা তো অনেক পর্যটক দার্জিলিং-এ আসেন। এছাড়া এই সময়টা বছরের শেষের ছুটি কাটানোর জন্য একটা উপযুক্ত সময়।
দার্জিলিং এর দর্শনীয় স্থান
দার্জিলিং অনেক দর্শনীয় স্থান আছে। প্রতি বছর অনেক পর্যটক এই দর্শনীয়
স্থানগুলোতে ভিড় করে। আপনিও চাইলেই দর্শনীয় স্থানগুলোতে ভ্রমণ করতে পার...।
বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোর বর্ণনা করা হলো
- টাইগার হিলঃ টাইগার হিল দার্জিলিং এর দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম। টাইগার হিল মূলত সূর্য উদয়ের জন্য বিখ্যাত ।সকালে টাইগার হিল থেকে সূর্যোদয় দেখার জন্য অসংখ্য পর্যটকের ভিড় জ... সকালে কাঞ্চনজঙ্ঘার পিছন থেকে যখন সূর্য উদয় ঘটে তখন এই দৃশ্য অপরূপ লাগে। এই দৃশ্য দেখার জন্য আপনাকে সূর্য উদয়ের একঘন্টা আগে টাইগার হলে যেতে হবে।
- বাতাসিয়া লুপঃ দার্জিলিং শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে বাতাসিয়া লুপের অবস্থান। এই শহরে আপনি টানেলের ভিতর রেল ভ্রমণ করতে পারবেন। যা আপনার মনে অপরূপ আনন্দের উদ্ভব ঘটাবে।
- দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে স্টেশনঃ একসময় এই রেল স্টেশন ছিল দেশের অন্যতম প্রধান রেজিস্ট্রেশন। পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথে রেল ভ্রমণ আপনার মনকে আনন্দিত করে তুলবে। এই ট্রেন টয় ট্রেন নামে পরিচিত। ভারতের বিভিন্ন বাংলা এবং বলিউডের মুভি গুলোতে ট্রেনগুলো আমরা দেখতে পাই।
- হ্যাপি ভ্যালি টুরিস্ট ডেডঃ এটি ভারতবর্ষের প্রথম চা বাগান। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এই চা বাগান ভ্রমণের জন্য আসে। এই চা বাগানের মনোরম দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। আপনি ১০০ টাকা টিকিট কেটে চা বাগান দেখতে পারেন।
- হিমালয়া মাউন্টিয়ারিং ইনস্টিটিউটঃ যারা পর্বতারোহন করতে চায় তাদেরকে এ ইনস্টিটিউটে পর্বতারোহনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এই ইনস্টিটিউট বিশ্বের অন্যতম সেরা পর্বতারোহন ইনস্টিটিউট। এখান থেকে আপনি পর্বতারোহনের যত যাবতীয় বিষয় শিখতে পারবেন। এই ইনস্টিটিউট থেকে আপনি কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউ বেশ ভালোভাবে দেখতে পারবেন।
দার্জিলিং ভ্রমণের খরচ
আপনার দার্জিলিং ভ্রমণের খরচ নির্ভর করবে আপনি কোন সময় দার্জিলিং ভ্রমণ করছেন
কতদিন থাকবেন কোন ধরনের হোটেল অবস্থান করবেন। সাধারণত ৫ দিন ভ্রমণের জন্য
দার্জিলিঙে জনপ্রতী ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। তবে আপনি গ্রুপ করে
ভ্রমণ করতে চাইলে কয়েকজন বন্ধু মিলে গেলে ভ্রমণ খরচ অনেকটা কমে যেতে পারে।
দার্জিলিঙে থাকার হোটেল
দার্জিলিঙে থাকার জন্য অসংখ্য হোটেল রেস্তোরা রয়েছে। এ সমস্ত হোটেল রেস্তোরাঁ
থেকে আপনাকে থাকার জন্য উপযুক্ত হোটেল নির্বাচন করতে হবে। আপনি যদি মাঝারি মানের
হোটেলে থাকতে চান তাহলে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকার ভেতরে হোটেল পেয়ে যেতে পারেন।
এছাড়া আপনি যদি আরো ভালো মানের হোটেলে থাকতে চান তাহলে আপনাকে আরো বেশি খরচ করতে
হবে।
শেষ কথা
আমরা আমাদের আলোচনায় দার্জিলিংয়ের ভ্রমণ সংক্রান্ত যতটুকু সম্ভব প্রায় সবকিছু
আলোচনা করার চেষ্টা করেছে। আপনি চাইলে দার্জিলিং ভ্রমণ করতে পারেন। কারণ অপরূপ
প্রাকৃতিক রূপ সৌন্দর্যের আধারের দার্জিল...।
আশা করি আমাদের লেখা আপনাদের ভালো লেগেছে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমাদের লেখা আপনাদের বন্ধু-বান্ধব সকলের মাঝে শেয়ার করুন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url